SSC Exam Will be Held 09 Subject

SSC Exam Will be Held 09 Subject.

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১৩টির পরিবর্তে ৯টি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে। পাবলিক ওই পরীক্ষার সময়ও কমিয়ে আনা হবে। ২০১৯ সাল থেকে এ পরীক্ষা পদ্ধতি কার্যকর হবে। বরেণ্য শিক্ষাবিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বিদ্যমান পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কার করে কাসে নানাবিধ সূচকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পর পাবলিক পরীক্ষা বিষয় কমানো হবে। শুধু পরীক্ষা পদ্ধতি নয়, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, পাঠ্যক্রম, পাঠ্যসূচি, পাঠ্যপুস্তক, পাঠদান ইত্যাদিতে সংস্কার আনা হবে। কক্সবাজারে গত শুক্র শনিবার দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের নিয়ে বৃহৎ পরিসরে একটি কর্মশালায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই কর্মশালায় শিক্ষাবিদরা এ বিষয়ে সুপারিশ করেন।

কর্মশালায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বাংলাদেশে প্রকৌশল জগতে বরেণ্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, গণ সাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীসহ অনেক শিাবিদ। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বোর্ড চেয়ারম্যানরা ওই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র মতে, দেড়-দুই মাস সময় নিয়ে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এভাবে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়। আবার শিক্ষা প্রশাসনও বছরের অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকে পরীক্ষা নিয়ে। উন্নত দেশে দশ-বারোটি বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হয় না। সেসব দেশে শুধু গণিত, মাতৃভাষা, ইংরেজি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। বাকি বিষয়গুলো কাসেই মূল্যায়ন করা হয়।

ওই কর্মশালায় শিক্ষাবিদরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১৩টির পরিবর্তে ৯টি বিষয়ে নেওয়া হয়। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাসে মূল্যায়ন করে বোর্ড পরীক্ষায় নম্বর যোগ করার বিষয় বিবেচনার কথা বলেন। দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষার সূচি না করে, কম সময়ে অথবা দুই বেলা পরীক্ষা গ্রহণ করা যায় কিনা সে বিষয়টিও ভেবে দেখার কথা জানান তারা। এ সবই সুপারিশ বলে জানান তারা। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার মান উন্নয়নে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় রচনা, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, পাঠ্যক্রম, পাঠ্যসূচি, পাঠ্যপুস্তক, পাঠদান ইত্যাদিতে সংস্কারের বিষয়ে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে একমত হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন আছে পাঠ্য পুস্তকের সংখ্যা কমানোর। এ জন্য শিক্ষাবিদদের মতামত নেওয়া হয়েছে কর্মশালায়। তারা মাধ্যমিক স্তরের কর্মমুখী শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা, চারু ও কারুকলাসহ চারটি বিষয় পাঠ্যসূচি না করে খেলাধুলা বা শারীরিক কসরতের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন। 

২০১৯ সাল থেকে এসব বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা হবে না। শিক্ষকরা মূল্যায়ন করবেন। বোর্ড তা অনুমোদন দেবে। এ ছাড়া নবম শ্রেণির ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন, গণিত, জীববিজ্ঞান বইয়ে অনেক সহজ বিষয় কঠিন করে তুলে ধরা হয়েছে। এসব বই পরিমার্জন করে সহজ ভাষায় যুগপোযোগী বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২০১৮ সালের শিক্ষাবর্ষেই নতুন সংস্করণের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের।

সম্প্রতি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন শিাবোর্ড। সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে পারেন না অনেক শিক। এতে প্রয়োজনীয় প্রশিণের অভাবকে দায়ী করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিকরা শর্ট-কাট পদ্ধতি বেছে নিয়ে বাজারের বিভিন্ন গাইডবই থেকে হুবহু প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন পাবলিক পরীক্ষায়। এভাবে শিার্থীদের গাইডবইয়ের প্রতি আসক্তি তৈরি করছেন শিকরা। অন্যদিকে কার্যকর হচ্ছে না সৃজনশীলতা। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে সরকার প্রশ্নব্যাংক গঠনের চিন্তা করছে। প্রশ্নব্যাংক করার বিষয়ে মতমত দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

এ ছাড়া ওই কর্মশালায় উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে পাবলিক পরীক্ষায় ভালো শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র ভুল মূল্যায়নে অকৃতকার্যের বিষয়টি। পরীক্ষকরা উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন স্ব স্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে। ফলে একই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থী ভিন্ন-ভিন্ন নম্বর পাচ্ছে। এমন ত্রুটি-বিচ্যুতি সরকার চিহ্নিত করে অভিন্ন পদ্ধতিতে উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিষয়টি সামনে আনছে। বিদ্যমান পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রেডিং পয়েন্ট (জিপিএ) নিয়েও কর্মশালায় আলোচনা হয়। 

ইরেজি মাধ্যম ‘ও’ ‘এ’ লেভেল পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতির জন্য অনেকে সুপারিশ করেন। কিন্তু এ পদ্ধতিতে কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায় জিপিএ কমে যাবে। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ নিয়ে আবার শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম, অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত পৌঁছবে মন্ত্রণালয়।

কর্মশালার সূত্রে আরও জানা গেছে, কারিকুলাম পর্যালোচনা, নির্বাচিত পাঠ্যপুস্তকের মান উন্নয়ন ও ভাষা প্রাঞ্জলকরণ, প্রশ্নব্যাংক ও পরীক্ষা সংক্রান্ত মোট চারটি সাব-কমিটি করার সুপারিশ করা হয়েছে। এসব কমিটির পরামর্শ ও মতামতের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তিতে অভিভাবক ও গণমাধ্যমের মতামত নিয়ে সংস্কার করবে পুরো শিক্ষা পদ্ধতি।

গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ বিষয়ে আমাদের সময়কে জানান, বিগত কয়েক দফায় দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের নিয়ে কর্মশালার সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় আগামীর করণীয় সম্পর্কে আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করবে।

উল্লেখ, শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে ১২ নভেম্বর জাতীয় শিা ব্যবস্থাপনা একাডেমি নায়েম মিলনায়তনে শিকদের মতামত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পাঠ্যক্রম, পাঠ্যবই পরিবর্তন করার জন্য বইয়ের লেখক, সম্পাদকদের মতামত নেওয়া হয়েছে ২১ নভেম্বর। তাদের মতামতের আলোকে ২৫-২৬ নভেম্বর কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয় এ আবাসিক কর্মশালা।

-দ্য রেডিও বাংলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *